মঠবাড়িয়ায় গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ

Sharing is caring!

সংবাদদাতা মঠবাড়িয়া >>>
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কে বাাঁধা দেওয়ায় সীমা রানী (৪৫) নামে এক গৃহবধূকে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। অগ্নিদগ্ধ ওই গৃহবধূ ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউড হাসপাতালে গত ১০ দিন ধরে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান। রবিবার রাতে নিহত গৃহবধূর লাশ পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। গত ৩ নভেম্বর ওই গৃহবধূ তার স্বামী সুমন বেপারী ধলা তার স্ত্রীকে মারধর করে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
অভিযুক্ত স্বামী সুমন বেপারী মঠবাড়িয়া পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের টিএনটি মহানন্দ বেপারীর বড় ছেলে । নিহত গৃহবধূর স্বামী সুমন বেপারী ধলার প্রেমিকা শিখা রানী বেতমোর গ্রামের বীরেন্দ্রনাথ বেপারীর মেয়ে।
এ ঘটনায় রবিবার রাতে নিহত গৃহবধূ সীমা রানীর ভাই শংকর চন্দ্র মন্ডল বাদী হয়ে মঠবাড়িয়া থানায় ওই গৃহবধূর স্বামী সুমন বেপারী (৪৮) ও তার কথিত প্রেমিকা শিখা রানী (৩৮) এর বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সুমন ও তার পরকীয়া প্রেমিকা শিখা রানী পলাতক রয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ডি এমপি এর কদমতলী থানার শ্যামপুর ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের নারায়ণ চন্দ্র মন্ডল এর মেয়ের সাথে পনের বছর পূর্বে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের সুমন বেপারীর সাথে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দীপ বেপারী নামের তের বছরের একটি ছেলে ও ঐশী বেপারী নামের আট বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
এ দম্পতির সংসার স্বচ্ছন্দে চলে আছিলো। সম্প্রতি স্বামী সুমন শীখা রানী নামে এক নারীর সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এ সম্পর্কের কথা সমুনের স্ত্রী সীমা জেনে যাওয়ায় স্বামীকে এ অনৈতিক সম্পর্কে বাঁধা দেয়। এর জের ধরে গত ৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী সুমন বেপারী স্ত্রীকে বেধরক মারধর করে। এরপর রান্না ঘরে রাখা কেরোসিন গায়ে ঢেলে স্ত্রী সীমার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। অগ্নিদগ্ধ সীমার আর্ত চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে গায়ের আগুন নিভিয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় ১২ নভেম্বর দুপুরে গৃহবধূ সীমা রানী মারা যান।
নিহত গৃহবধূর ছেলে স্কুলছাত্র দীপ বেপারীর অভিযোগ করেন, তুচ্ছ ঘটনায় বাবা প্রায়ই আমার মাকে মারধর করতেন। ওই দিন আমারা দুই ভাই বোন প্রাইভেট পড়তে গেলে বাবা মাকে বেদম মেরেছে। আমার মা হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় আমাকে বলেছে বাবা মাকে মেরে কেরাসিন ঢেলে গায়ে আগুন লাগিয়েছে।
এ ব্যাপরে মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পারিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মৃত গৃহবধূর ভাই হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত স্বামী সুমন ও তার কথিত পরকীয়া প্রেমিকা পলাতক। তাদের গ্রেফতারে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

Sharing is caring!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

YouTube
error: Content is protected !!