বড়মাছুয়া-শরণখোলা খেয়াঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ,
মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি :
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় দুই জেলার বড়মাছুয়া ও শরণখোলা আন্তঃবিভাগীয় খেয়া ঘাটটি যাত্রী সাধারণকে জিম্মি করে নির্ধারিত টোলের চেয়ে ৮/১০ গুণ অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। খেয়াঘাটটি ইজারাদার অবৈধভাবে অতিরিক্ত মূল্যে সাব-লীজ দেয়ায় নির্ধারিত টোলের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে। এতে খেয়ায় চলাচলকারী দুই জেলার যাত্রী সাধারণের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে ােভের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেও কোন সাড়া মিলছে না বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় হতে বাংলা ১৪২৬ সালের ৩০শে চৈত্র থেকে এক বছরের জন্য বলেশ^র নদে বড়মাছুয়া-শরণখোলা খেয়া ঘাটটি ২৪লাখ ৫৫হাজার ৯শ ৪৮ টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বড়মাছুয়া ইউপি সদস্য কাইয়ূম হাওলাদার ইজারা বন্দোবস্থ পান। তিনি ঘাট ইজারা পেয়ে বিধি বহির্ভূতভাবে দুইগুন লাভে স্থানীয় সামসুল হক মৃধা, শরণখোলার তৌহিদুল ইসলাম (ডিলার), আবদুল কাদের ও বড়মাছুয়ার মৎস্য আড়ৎদার ফারুক তালুকদারের কাছে ঘাটটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় প্রকাশ্যে সাব লীজ দেন ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বলেশ্বর নদীর দুইপাড়ে জেলার উপকূলীয় মঠবাড়িয়া ও বাগেরহাটের শরণখোলার রায়েন্দায় এ খেয়াঘাট অবস্থিত। ফেরী পাড়াপাড় বা সড়ক পথের বিকল্প পথ না থাকায় এ খেয়া ঘাট থেকে প্রতিদিন খুলনা, মংলা,বাগেরহাট,মোড়েলগঞ্জ,শরণখোলা,বরগুনা,পাথরঘাটা ও মঠবাড়িয়াসহ দণিাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার প্রায় সহ¯্রাধীক মানুষ যাতায়াত করে থাকেন। খোয়ার দুইপাড়ে টোল চার্ট বোর্ড টানিয়ে নির্ধারিত টোল আদায়ের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। খেয়া পারাপারে নির্ধারিত টোল না মেনে জনপ্রতি ৫০ টাকা এবং মটরসাইকেল চালকসহ ৪০ টাকার স্থলে ১০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও লীজ গ্রহনকারী ইজারাদারের ঘাট নির্মান ও সংরক্ষনের নিয়ম থাকলেও নিজস্ব ঘাট না থাকায় দুইপাড়ে সরকারী পল্টুন ব্যবহার করায় যাত্রীপ্রতি অতিরিক্ত ৫ টাকা গুনতে হয়।
মঠবাড়িয়া শহরের কে, এম, লতীফ ইনস্টিটিউশনের ইংরেজী বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক আয়শা খানম জানান, তিনি মাছুয়া-রায়েন্দা খেয়া পার হয়ে নিয়মিত বাড়িতে আসা যাওয়া করেন। বড় মাছুয়া স্টীমার ঘাটের যাত্রীসহ জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই খেয়াঘাটটি বেশী টাকায় সাব-লীজ নিয়ে জনগনের প্রতি অত্যাচার চালাচ্ছে। তিনি খেয়াঘাটের জুলুম বন্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মঠবাড়িয়া সরকারী কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী জয়া মন্ডল বলেন, টার্মিনাল ও খেয়া ৫০ টাকার কম দিতে চাইলে ট্রলার থেকে নেমে যেতে বলেন। যাত্রীদের হাতে থাকা ১০/১৫ কেজি ওজনের ব্যাগের জন্য অতিরিক্ত ৩০/৪০টাকা করে গুনতে হয়।
এ ব্যপারে ঘাট ইজারাদার আব্দুল কাইয়ুম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শীঘ্রই দুই পাড়ে যাত্রী ও পণ্য পারাপারের রেট চার্ট টানানো হবে।
এ বিষয় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ও আন্তঃবিভাগীয় ফেরি ইজারা কমিটির আহবায়ক সুবাস চন্দ সাহা জানান, সরকার অনুমোদিত টোল রেট চার্ট না টানিয়ে অতিরিক্ত টোল আদায় দÐনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।