মঠবাড়িয়ায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর আতংকে ৫৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে দুর্গত মানুষের ভির
মঠবাড়িয়া সংবাদদাতা :
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় আজ শুক্রবার দুপুরে ফণীর প্রভাবে আকস্মিক ঝড় বৃষ্টিতে উপজেলার বলেশ্বর নদ তীরের মানুষ আতংকিত হয়ে পড়ে। প্রায় ২০ মিনিটের হাল্কা ঝড়ো বৃষ্টিতে নদী তীরবর্তী সাপলেজা ইউনিয়নের ক্ষেতাছিড়া,কচুবাড়িয়া জেলে পল্লীর অন্তত ৪০টি ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কিছু গাছ পালা উপরে পড়েছে। বলেশ^র নদে অস্বাভাবিক জোয়ারের প্লাবনে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব এলাকার ডাল ফসল ২ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষেতাছিড়া ও কচুবাড়িয়া পয়েন্টে বেড়িবাঁধ নদের প্লাবনে হুমকীর মুখে রয়েছে।
বিকাল থেকে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হলে এসব এলাকার মানুষ রাতের ঝড়ের পড়ার কবলে আতংকে পাশ^বর্তী সাইকোন শেল্টারে সন্ধ্যার পর থেকে ভির করে। এসময় গৃহস্থ পরিবার গুলো তাদের ঘরবাড়ি দড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন কেউ কেউ।
জানাগেছে, উপজেলার ৫৫টি সাইকোন শেল্টারে এখন ঝড় আতংকিত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিএম সরফরাজ ্এর তত্বাবধানে সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকরা বলেশ^র নদের মাঝের চরের ১২০০ জেলে পরিবারের সদস্যদের অর্ধেক মানুষকে মাঝের চর ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ওই চরের বাকি জেলে পরিবার গুলোকে নদী পার হয়ে উলুবাড়িয়া সাইকোন শেল্টারে উঠিয়ে দিয়েছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিত পরিবার গুলোকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুকনা খাবার ও সুপেয় পানি বিতরণ করছেন।
সরেজমিনে বলেশ^র নদের বড়মাছুয়ায় সেনাবাহিনী নির্মিত ঘূণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে ৩০০ শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিতে দেখা যায়। শুধু এ আশ্রয় কেন্দ্রে নয় উপজেলার ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্র এখন দুর্যেগ কবলিত মানুষের ভীর। অনেক পরিবার নিজের বসতি ফেলে গায়ের পাকা কোনও বাড়িতেও আশ্রয়ের জন্য ছুটছে। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরে আশ্রয় কেন্দ্র না যাওয়ায় এসব মানুষ চরম বিপন্ন হয়েছিল। এবার তারা এমন ভুল আর করতে রাজি হনননি।
উপজেলার ৫৫টি সরকারি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র এবং বেসরকারি পর্যায়ের আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে স্কুল ,কলেজ, মাদ্রাসা, ইউনিয়ন পরিষদ, দুর্যোগ কবলিত জনগণের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলায় সিপিপির মোট ১হাজার ২৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মোকাবেলা কমিউনিটি বেইজ কাজ করছেন।
মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিএম সরফরাজ বলেন, নদী তীরের বিপন্ন মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্র নিয়ে আসা হয়েছে। সেই সাথে তাদের গবাদিপশু আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে রাখা হয়েছে। বিকেল থেকে এসব আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে শুকনা খাবার ও পানি বিতরণ করা হয়েছে।