মঠবাড়িয়ায় বৈশাখী মেলায় প্রাণবন্ত করে তুলেছে নীল নাচ
মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি :
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখন বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব মেলার বড়মাছুয়া ঠাকুর বাড়ি নীল নাচের দলের পরিবেশনায় মেলাকে আরও প্রাণবন্ত করেছে। নীল উৎসবকে ঘিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিবছর পুরো চৈত্রমাস জুড়ে গ্রামে গঞ্জের গৃহস্থের উঠান জুড়ে বসে নীল নাচের আসর । হাটবাজারেও নীল নাচ উপভোগ করছে হাটুরে মানুষ।
প্রতিটি নীল নাচের দলে ১০/১২জনের রাধা,কৃষ্ণ,শিব,পার্বতি,নারদসহ সাধু পাগল(ভাংরা)সেজে সকাল থেকে মধ্য রাত অবধি পুরো চৈত্র মাস ধরে নীল নাচ গান পরিবেশন করে থাকেন। গ্রাম বাংলার সকল মানুষের কাছে দারুণ উপভোগ্য এই নীল নাচ। চৈত্র সংক্রান্তি মেলায় নীল পূজা শেষে শেষ হয়েছে এ নীল নাচ। এই নীল পূজার জন্য নীল নাচের দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল,ডাল আর নগদ অর্থ সংগ্রহ করেছে। নীল পূজা মূলত হিন্দু ধর্মীয় উৎসব হলেও চৈত্র সংক্রান্তির উৎসবে মিলে তা সার্বজনীন এক উৎসবে পরিনত হয়।
স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, ১লা বৈশাখ রবিবার উপজেলার বড়মাছুয়া খেজুরবাড়িয়া ঠাকুর বাড়ির মাঠে ঐতিহ্যবাহী এ নীল পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় দুইশত বছর ধরে এখানকার ঠাকুর বাড়ির আশপাশের মাঠ জুড়ে এ নীল পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এছাড়া মিরুখালী,কবুতরখালী,শাপলেজাসহ খাছিছিড়া বেপারি বাড়ি ও কালিরহাট গ্রামের নীলখোলার মেলায় নীল পূজা ও নীল নাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নীল নাচ ঠিক আগের মত যত্র তত্র দেখা মেলেনা। কালের পরিক্রমায় বাঙালীর এ ঐতিহ্যের সংস্কৃতি বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে।
এ নীল নাচের দলের দলপতি বড়মাছুয়া ঠাকুর বাড়ির নিত্যানন্দ চক্রবর্তী জানান,পুরো চৈত্র মাস ধরে ১২ সদস্যের নীল দল মঠবাড়িয়ার গ্রামাঞ্চলে নাচ গান করে মানুষের মনোরঞ্জন করে। তবে নীল পূজা কমে যাচ্ছে। সেই সাথে নীল দলের নাচও তেমন আর দেখা মিলছেনা। ঐতিহ্যের এ নীল নাচ ক্রমেই বিলপ্তির দিকে যাচ্ছে।