বলেশ্বরে জেলেদের হামলা ঠেকাতে কোস্টগার্ডের ২৩ রাউন্ড গুলি বর্ষণ, মহিলাসহ আহত ১০
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) সংবাদদাতা
পিরোজপুরের তুষখালী সংলগ্ন বলেশ^র ও পোনা নদীতে মৎস্য বিভাগের অবৈধ জাল আটকের ঘটনায় কোস্টগার্ড ও পুলিশের সাথে জেলেদের হামলা-পাল্টা হামলায় এক মহিলা গুলিবিদ্ধসহ ১০জন আহত হয়েছে। এ সময় জেলেদের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হামলা মোকাবেলায় কোস্টগার্ডকে ২৩ রাউন্ড গুলি ছুড়তে হয় বলে জানা গেছে।
পিরোজপুরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল বারী জানান, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে জেলা জাটকা সংরক্ষণ কর্যক্রমের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় ভাণ্ডারিয়ার তেলিখালী ক্যাম্পের কোস্টগার্ড সদস্য, মঠবাড়িয়া থানার পুলিশ ও মঠবাড়িয়ার মৎস্য কর্মীদের নিয়ে প্রথমে বলেশ^র নদীতে অবৈধ জাল আটক করা হয়। অভিযানের এক পর্যায়ে ভাÐারিয়া উপজেলার তেলিখালী ইউনিয়নের পোনা নদীর উত্তরপাড়ে হরিণপালা জেলে পাড়ায় অবৈধ জাল আটক করার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী বাঁধা দেয় এবং অভিযানকারীদের উপর হামলা চালায়। প্রথমে কোস্টগার্ড ও পুলিশ লাঠিপেটা করে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেস্টা করে। কিন্তু নারী-পুরুষ মিলে দলবদ্ধ হয়ে রামদা, সড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র হামলা করলে ম্যাজিস্ট্রেট খায়রুল ইসলাম চৌধুরীর নির্দেশে কোস্টগার্ড ২৩ রাউন্ড গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এ সময় জেলেপাড়ার আব্দুল খালেকের স্ত্রী হাজেরা বেগম (৬০) হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া মোতালেব হাওলাদার (৫৫) ও তার ছেলে শাহীন (৩৫) এবং আব্দুল আজিজের ছেলে জসিম হাওলাদার (২৮) আহত হয়েছেন বলে এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে ভাÐারিয়া থানার ওসি এস এম মাকসুদুর রহমান জানান।
ভান্ডারিয়ার তেলিখালী ইউপি চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন হাওলাদার জানান, কোস্ট গার্ড নদীর তীরে রাখা জাল আটক করতে গেলে স্থানীয় জেলেরা বাঁধা দেয়। এসময় লাঠির আঘাতে জেলে পারার জসিম (২৪), সাদ্দাম (২৫), তহমিনা (৪৫), শাহনাজ (২০), সেলিম (২২), হেলাল (১৮) হেলাল (৩৫) আহত হয়।
অপরদিকে জেলেদের হামলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের পেশকার আবুল কাশেম আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে কোস্টগার্ড থেকে কোন বক্তব্য জানা সম্ভব হয় নি। তবে পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট কাজী সালেহ মুসতানজির বলেন, কোস্টগার্ডকে ম্যাজিস্ট্রেট বাধ্য হয়ে গুলি চালাতে নির্দেশ দেন। এ সময় চালানো ফাঁকা গুলিতে কেউ আহত হননি।
ভাÐারিয়া থানার ওসি এস এম মাকসুদুর রহমান জানান, তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ ব্যাপারে ভাÐারিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করা হবে। এ অভিযানকালে কারেন্টজাল, বেহুন্দীজাল, ড্রামসহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাছ ধরার সরঞ্জাম আটক করে পুড়ে ফেলা হয়।