মঠবাড়িয়ায় বাড়ছে ডায়রিয়া , সর্বত্র সুপেয় পানির সংকট

Sharing is caring!

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) সংবাদদাতা >>>
মঠবাড়িয়ায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অনাবৃষ্টি ও গ্রীস্মের তাপদাহে পানীয় পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। অপরদিকে খালের লবনাক্ত পানি ও শুকিয়ে যাওয়া পুকুরের শ্যাওলাযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে ডায়রিয়া, আমাশা, চর্মরোগসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুসহ ২ শতাধিক নারী-পুরুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালে বেডের অভাবে অনেক রোগী বারান্দার মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদিকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতাল ও বাজারে স্যালাইন সংকট দেখা দিয়েছে।


জানাগেছে, উপকূলীয় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বলেশ^রনদ মধ্যবর্তী মাঝেরচর ও ১১টি ইউনিয়নে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের খাবার পানির উৎস পুকুর, খাল ও সংরক্ষনকৃত বৃষ্টির পানি। বর্তমানে অনাবৃষ্টি ও গ্রীস্মের তাপদাহে পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে খালে লবনাক্ত পানি প্রবেশ করায় সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এতে প্রচন্ড গরম ও দুষিত পানি ব্যবহারে ডায়রিয়াসহ আমাশা, চর্মরোগসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এলাকার মানুষ। এদিকে হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের ফার্মেসীতে স্যালাইন শূণ্য হয়ে পড়েছে। ফলে ফার্মেসি থেকে অতিরিক্ত দামে কিনতে হচ্ছে স্যালাইন ।

ভূক্তভোগি এলাকাবাসিরা জানান , উপজেলায় গণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার কয়েকহাজার ডিপ টিউবওয়েল, পিএসএফ ও খননকৃত পুকুর থাকলেও তার বেশীর ভাগই ব্যবহারে অনুপযোগী। যার কারনে নদ তীরবর্তী এলাকায় তীব্র পানির সংকট চলছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরুপ যে বৃষ্টির পানি সংরক্ষনের জন্য রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ট্যাংক সরবরাহ করা হচ্ছে তা বাড়িয়ে আরও পর্যাপ্ত পরিমান ব্যবস্থার দাবি জানান।
বেতমোড় গ্রামের বাসিন্দা হারুন মিয়া জানান, তাদের গ্রামের অধিকাংশ রির্জাভ পুকুর এখন পানিশুন্য। পরিবারের নারী সদস্যরা ২/৩ মাইল পথ হেটে যে পানি সংগ্রহ করছেন তাও দুষিত। আর এসব পানি পান করেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রেজাউল কবীর জানান,উপজেলায় নলকুপের পানি লবনাক্ত হওয়ার কারনে পন্ড স্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ) ও রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং এর উপর নির্ভর করতে হয় মানুষকে। উপজেলায় পর্যাপ্ত পিএসএফ থাকলেও পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। যার কারনে তীব্র পানি সংকট চলছে।


মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফেরদৌস ইসলাম প্রিন্স খাবার স্যালাইন থাকলেও কলেরা স্যালাইন সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, প্রচন্ড গরম, দূষিত পানি পান এবং সচেতনতার অভাবে ডায়রিয়ার রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই ৩০/৪০ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তির্ হলেও প্রত্যন্ত এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশী।


এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উর্মী ভৌমিক জানান, প্রখর খরতাপে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। উপজেলা ব্যাপী তীব্র পানি সংকটের স্থায়ী সমাধানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও জরুরী পদপে নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

Sharing is caring!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

YouTube
error: Content is protected !!